‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি’ আসলে কে? জানুন তাঁর জীবনের আসল গল্প?

বহু বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে শেষমেশ ২৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছে সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ি।হুসেন জাইদির বিখ্যাত উপন্যাস ‘মাফিয়া কুইন অফ মুম্বই’ অবলম্বনেই এই ছবি বানিয়েছেন বনশালি।এই ছবিতে গাঙ্গুবাই Gangubai kathiawadi এর ভূমিকায় দেখা গেছে আলিয়াকে। একজন সাধারন নারী কি করে যৌনকর্মী হয়ে উঠলেন। এরপর সমাজকর্মী থেকে রাজনীতিতে যোগদান করলেন কীভাবে? কে এই ‘গাঙ্গুবাঈ’? কী তাঁর জীবনের আসল গল্প জানুন।
গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ির জন্মঃ-
তার আসল নাম গঙ্গুবাই হরজীবনদাস, যিনি ‘গম্বুবাই কোঠেওয়ালি’ নামে পরিচিত। গুজরাতের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক মহিলা। তিনি জন্মগ্রহন করেছিলেন ১৯৩৯ সালে। গুজরাটের এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি।যিনি অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন।
গাঙ্গুবাইকে বিক্রি করা হয়েছিল পতিতাবৃত্তিতেঃ-
মাত্র ১৬ বছর বয়সে গাঙ্গুবাই তার বাবার হিসাবরক্ষক রমনিককে বিয়ে করে মুম্বইতে চলে আসেন। প্রেমিক-স্বামী রমনিক গাঙ্গুবাইকে কামাথিপুরার পতিতালয়ে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। ছোট বয়সেই জোর করে গাঙ্গুবাইকে দেহ ব্যবসায় নামনো হয়।
মাফিয়া ডন করিম লালার গ্যাঙের এক সদস্য গাম্বুবাইকে ধর্ষণ করে।যার বিচার চেয়ে গাঙ্গুবাঈ করিমলালার সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর হাতে রাখি বেঁধে মাফিয়া ডন করিম লালাকেই ভাই বানিয়ে নেন। এরপর করিমই গাঙ্গুবাঈকে কামাথিপুরা এলাকার দায়িত্ব দেন।এরপর গাঙ্গুবাই থেকে ধীরে ধীরে মুম্বাইয়ের মাফিয়া কুইন’ হয়ে ওঠেন।
গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি বিখ্যাত হয়েছিলেন কেনঃ-
গাঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি অন্ধকার জগতের পতিতাদের অধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন।কোনও মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে গাঙ্গুবাই তাঁকে দেহ ব্যবসায় রাখতেন না। গাঙ্গুবাই মুম্বইয়ের যৌন কর্মী ও অনাথ শিশুদের জন্য বেশকিছু কাজও করেন। যৌনকর্মীরা যাতে সমাজে সমস্তরকম অধিকার পান, তাঁদের সন্তানেরা যাতে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে, পড়াশোনা করতে পারে, তার জন্য লড়াই করতে থাকেন।
তাঁর নির্দেশ ছাড়া সেখানে কোনও কাজ হত না।পরবর্তী জীবনে যৌনকর্মীদের দুর্দশার বিষয়ে আলোচনা করতে এবং তাদের জীবনযাত্রার উন্নতির জন্য তিনি জওহরলাল নেহেরুর সাথে দেখা করেছিলেন। পরবর্তীকালে রাজনীতিতেও ডাক পান।কাথিয়াওয়াড়ির এই অদম্য লড়াইয়ের জন্যই তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন।
গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ি মৃত্যুঃ-
২০০৮ সালে গাঙ্গুবাঈ কাঠিয়াওয়াড়ির মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর এলাকার পতিতালয়ে তার ছবি ও মূর্তি স্থাপন করা হয়।