নিউজ ডেস্কঃ সাধারণ আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত ফেমেলীর থেকেও লড়াইটা ছিলো ভীষণ কঠিন।বিহারের আরার সুন্দরপুরবার্জা গ্রামে এক চাষীর পরিবারে জন্ম।মাত্র ১৬ বছর বয়সে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি।দিনে ৫০-১০০ টাকার জন্য কাজ করতেন ১২ ঘন্টা।খাবার এর রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে বাদ যায়নি রডের ফ্যাক্টরি সমস্ততেই কাজ করেছেন তিনি।কিন্তু প্রতিভাকে তো আটকে রাখা সম্ভব নয়। কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল ইচ্ছেশক্তির ফলে আজ তিনি সাফল্যের শিখরে।জীবনের যত প্রতিবন্ধকতাগুলি আছে সমস্তকেই আজ শেষ করে দিয়ে আজ তিনি সাফল্যের শিখরে।আর এই মানুষটির নাম বলবঙ্কা তিওয়ারি।এক সময়ে ফ্যাক্টরিতে কাজ করা এই যুবক সদ্য ইন্ডিয়ান মিলিটারি আকাডেমি (IMA)পদে গ্রাজুয়েট হয়েছেন তিনি।
ছিলেন আর্মি জওয়ান হলেন আর্মি অফিসার।তাই দিন কয়েক আগে সেনার তরফে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো,সেখানে স্ত্রী,মা ও নিজ কন্যা সন্তানের সামনে সম্মানিত করা হয়েছিল তাকে।
এবছরের শুরুতে করোনা সংক্রমন তারপর দীর্ঘদিন ছিলো লকডাউন এই লম্বা সময়ে ট্রেনিং।তাই বাড়ি গিয়ে মেয়ের জন্মের সময় থাকা হয়নি বলবঙ্কার।অনুষ্ঠানের দিন ১২ ডিসেম্বর তিনি প্রথম তার মেয়ের মুখ দেখলেন।এই আর্মি অফিসারের মা মুন্নী দেবী বল্লেন,”একসময় ছেলেটি প্রচুর পরিশ্রম করেছে সংসারের জন্য।মাত্র ১৬ বছর বয়সে কাজে যোগ দিয়ে ৫০-১০০ টাকার বিনিময়ে ১২ ঘন্টা কাজ করতে হতো তাকে।”নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ও পরিশ্রমের ফলেই তিনি সাফল্য পেয়েছেন বলে মনে করেন বলবঙ্কা।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের সাফল্যকে ভাগ করে নিয়েছেন বলবঙ্কা তিওয়ারি।তিনি বলেছেন,তিনি বলেছেন চাকরির খোঁজ করতে প্রথমে তিনি ওড়িশার রাউরকেল্লায় যান এরপর সেখানে রডের কারখানায় কাজ শুরু করেন।লোহা কাটা ও রড তৈরী সব কাজ হতো সেখানে।এরপর একটি খাবারের রেস্টুরেন্টে কাজে যোগ দেন।তবে সেনাবাহিনীর প্রতি আগাগোড়া ঝোঁক ছিলো তার তাই রেস্টুরেন্টে কাজ করলেও পড়াশোনা ও টিউশন চলছিল তার।গ্রামের লোকজন একজন জওয়ানকে কিভাবে সম্মানিত করেন সে বিষয়ে কিভাবে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন তাও বলতে ভোলেননি তিনি।
২০১২ সালে তিনি বসেছিলেন ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার্সের এন্ট্রান্স(EME)পরিক্ষায় তবে এবার ছিলো দ্বিতীয়বার এই দ্বিতীয়বারেই তিনি সাফল্য লাভ করেন।
পাঁচ বছর ধরে জওয়ান এর কাজ করে অফিসার পদের জন্য প্রস্তুতি চলতে থাকে।এরপর একবছর কঠোর পরিশ্রম করতে করতে ২০১৭ সালে সাফল্য লাম করেন আর্মি ক্যাডেট কলেজের পরিক্ষায়।এই কথা বলছিলেন তিনি ভীষন তৃপ্তির সাথে। পাশাপাশি তিনি বলছিলেন বাবা গর্বের সাথে এবার বলতে পারবেন আমি আর্মি অফিসার। আর দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আমি ভীষণ আপ্লুত।