নাবালিকার হাতে সেফটিপিনে খােদাই সিনিয়রদের নাম, নৃশংস অত্যাচার লিলুয়ার সরকারি হােমে

নিউজ ডেস্কঃ খাতায়-কলমে সরকারি হােম, কিন্তু নজরদারি কোথায়! পুরুলিয়ার পর এবার হাওড়ার লিলুয়ার হােমে চরম নৃশংসতা।লিলুয়ার এক সরকারি হােমের বিরুদ্ধে ফের উঠল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
সারা হাতে সেফটিপিনের ক্ষত,দগদগে ঘা-হাতে লেখা সিনিয়রদের নাম।শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের চিহ্ন নিয়ে বাড়ি ফিরল চুঁচুড়ার নাবালিকা।নির্যাতিতা কিশােরী জানিয়েছে,হােমে সবাই সবার হাতে নাম লিখছিল। সিনিয়র দিদিরা বলল,তাের হাতেও নাম লিখতে হবে। আমি রাজি ছিলাম না, জোর করে হাতে সেফটিপিন দিয়ে নিজেদের নাম খােদাই করে দিয়েছে হােমের সিনিয়ররা।
নির্যাতিতা ওই কিশােরীর বাড়ি হুগলিতে। স্থানীয় একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সে। গত ১৫ ডিসেম্বরের রাতে বাবা-মার সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি ছাড়ে ওই নাবালিকা। তারপর এদিক-সেদিক ঘুরতে ঘুরতে সে চলে আসে হাওড়া স্টেশনে।ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে জিআরপি পরে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের মারফৎ তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাওড়ার লিলুয়ার একটি সরকারি হােমে। ১৭ তারিখ হােম থেকে বাড়িতে যােগাযােগ করা হয় পরে আইনি প্রক্রিয়া করে ৪ জানুয়ারি বাড়ি ফিরিয়ে আনে।২০ দিন পর যখন বাড়ি ফেরে,তখন পরিবারের লােকেরা দেখেন,ওই নাবালিকা লােকেরা দেখেন, ওই নাবালিকা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত।বাড়ির লােককে গােটা ঘটনাটি জানায় ওই নাবালিকা। ‘হােমের দিদিরাই সব করেছে, নতুনদের বড়দের কথা শুনে চলতে হয়।হােম কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি, ওরা নিরাপত্তারক্ষীর মতাে ঘুরে বেড়ায়,কিছু দেখে না।এসব শুনে বিচার চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ নাবালিকার পরিবার।
হােম মানে ঘর সবচেয়ে সুরক্ষিত জায়গা।অভিভাবকহীন ছেলে-মেয়েদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাজ্যের সর্বত্র হােম চালায় সরকার। কিন্তু সেই হােম যারা থাকে, তাদের সুরক্ষা দেবে কে! লিলুয়াকাণ্ডের পর সেই প্রশ্নই উঠছে।লিলুয়ার ওই হােমের সুপারের দাবি, ‘কোনও অভিযােগ আসেনি। হােমে ওই নাবালিকা ছিল কিনা,তা মনে করতে পারছি না। সরকারি হােমে কোনও নাবালিকা এলে নাম নথিভুক্ত করে রাখা হয়। সেক্ষেত্রে সুপার কীভাবে ঘটনাটি ভুলে গেলেন?এখন প্রশ্ন উঠেছে সরকারি হােমের নিরাপত্তা নিয়ে।