জলপাইগুড়ি, রাজগঞ্জঃ সভ্যতার পর এতগুলাে যুগ কাটিয়ে ফেললাম আমরা। তারপরও এই প্রবল অমানবিক ও পৈশাচিক কান্ড ঘরে ঘরে ঘটে চলেছে। অত্যন্ত লজ্জার কথা, বধূহত্যা কমে যাওয়া দূরের কথা,বেড়েই চলেছে।
কোথাও পণ না দেওয়ার জন্য, কোথাও সম্পত্তির লােভ, কোথাও অন্য কিছু।এভাবে চলে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির লােকজনের নির্যাতন,শেষে হত্যা।বধূহত্যার সবচেয়ে চালু ও সহজ উপায় হলাে,গায়ে কেরােসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া।একেবারে হাতের কাছেই থাকে এর উপকরণ, তেল ও দেশলাই।এদেশে অনন্তকাল ধরে এমন ঘটনা ঘটে চলছে।
এমনি এক পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জে।জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের উল্লাডাবরি ডাঙাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলিদেব রায়ের মেয়ে পিঙ্কির সঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের ছেলে দিবাকরের বিয়ে হয় ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ। পারিবারিক দেখাশােনা করেই এই বিয়ে হয়। বিয়ের সময় পাত্র পক্ষের দাবি অনুযায়ী ৫ ভরি সােনা, ২ লক্ষ টাকা সহ আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ফের পণের দাবিতে পিঙ্কির ওপর অত্যাচার চালাতে থাকে দিবাকরের পরিবার।তাঁকে প্রায়ই মত্ত অবস্থায় মারধর করা হত বলেও অভিযােগ করেছে পিঙ্কি।
পিঙ্কির অভিযােগ ২০২০ সালে ২৭ অগাস্ট অশান্তির সময়ে শাশুড়ি তাঁর গায়ে কেরােসিন। তেল ঢেলে দেশলাই আনতে গেলে কোনওক্রমে পালিয়ে যায়। এরপর বাপেরবাড়ি চলে আসে এবং কয়েকবার থানায় গিয়ে লিখিত অভিযােগ করার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি কারন। খগেশ্বর রায় রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে তাঁর পিছনে লােক লাগিয়ে দিতেন এমনটাই দাবি পিঙ্কির। পরে রাজগঞ্জ থানায় খগেশ্বর রায় ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযােগ দায়ের করেন পিঙ্কি।কিন্তু পুলিস তাঁর অভিযােগ নিলেও কোনও রিসিভ কপি তাঁকে দেয়নি বলে জানিয়েছে সে।
যদিও রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেছে সব অভিযােগ মিথ্যা।উল্টে পিঙ্কি নাকি তাঁদের পদে পদে হুমকি দিত ৪৯৮ ধারায় মামলা করে বাড়ির সবাইকে জেলে ঢােকাবার ভয় দেখাত।আর এখন নাকি সরাসরি হুমকি দিচ্ছে ডিভাের্সের মামলা করে ৬০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নেওয়ার। জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানান রাজগঞ্জ থানায় একটি গার্হস্থ্য হিংসার অভিযােগ দায়ের হয়েছে, আমরা অভিযােগকারীর সাথে কথা বলেছি।