সিভিক ভলেন্টিয়ারদের জন্য এবার কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নতুন নিয়ম না মানলে কেড়ে নেওয়া হবে চাকরি, এমনকি পোহাতে হতে পারে শাস্তিও। সম্প্রতি নবান্নের তরফ থেকে এক নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের এবার থেকে দেওয়া হবে একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ। ৩ মাস ধরে এটি চলবে, এবং এর উদ্দেশ্য হল তাদের নিজেদের কাজের প্রতি আরো দক্ষ করে তোলা। জানুয়ারি থেকেই এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে এবং তারপর থেকে সমস্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার যারা চাকরি করছেন বা ভবিষ্যতে চাকরি পাবেন, সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে এই প্রশিক্ষণ নিতে হবে।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও উপযোগিতা
রাজ্য সরকারের লক্ষ্য সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কর্মক্ষমতা উন্নত করা এবং তাদেরকে আরো দায়িত্বশীল কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা। প্রশিক্ষণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে— মৌলিক আইন জ্ঞান, মানুষের সঙ্গে সদাচরণ শেখানো, জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা অর্জন, এবং শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি। জেলা স্তরে পুলিশ সুপার এবং কমিশনারেট এলাকায় নগরপালের অধীনে এই প্রশিক্ষণ বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।
কেন এই পদক্ষেপ?
সম্প্রতি আর জি কর হাসপাতালের ঘটনায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়। এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠার পর রাজ্য সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে জবাবদিহি করতে বাধ্য করে এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলে। আদালত জানায়, সংবেদনশীল স্থানে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না। এর পরই রাজ্য সরকার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দক্ষতা বাড়াতে এবং জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও সরকারের পদক্ষেপ
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কাজের দক্ষতা বাড়াতে এবং জনসাধারণের পুলিশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকার প্রশিক্ষণের এই পরিকল্পনা করেছে। এতে প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার সিভিক ভলেন্টিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবেন।
প্রশিক্ষণের প্রস্তুতি
ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের অধীনে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তবে রাজ্যজুড়ে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে। প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হল সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দায়িত্বশীল এবং পেশাদার কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা, যাতে তারা মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে পারে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।