WB SSC Scam – রাজ্যের চাকরি বাতিল প্রক্রিয়ায় নজির সৃষ্টি করল মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর হাই স্কুল। কি সেই নজির আসুন জানবো আজকের এই প্রতিবেদনে। আমরা সকলেই জানি মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে এক লহমায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়েছে। ২০১৬ সালের রাজ্য স্তরে যে পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক এবং শিক্ষিকার পদে কর্মী নিয়োগ হয়েছিল সব মিলিয়ে সেই সংখ্যাটি ছিল ২৫ হাজারেরও বেশি।
সেই সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করেছে হাইকোর্ট। গত ২১শে এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট এই নির্দেশ দেওয়ায় বড়সড় ধাক্কার মুখে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার। সামনে রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যেই প্রথম দফার ভোট পর্ব হয়ে গিয়েছে। বাকি রয়েছে এখনো বেশ কয়েক দফার ভোট। এরই মাঝে এমন বিপত্তিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ার উপক্রম তৃণমূল কংগ্রেসের। যদিও এ প্রসঙ্গে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানান তাঁরা চাকরি হারাদের পাশে রয়েছেন, বেআইনিভাবে যে রায় ঘোষণা করা হয়েছে সেই রায়কে তিনি চ্যালেঞ্জ করবেন।
কলকাতা হাইকোর্ট শুধুমাত্র নির্দেশ দিয়েই ক্ষান্ত হননি বলা হয় ছয় সপ্তাহের মধ্যে বেতন ফেরত দিতে হবে কর্মহীনদের। এই নিয়োগ আসলে সম্পূর্ণরূপে অবৈধ, তাই বোর্ডকে নতুন ভাবে নিয়োগের নির্দেশ দেন আদালত। এই কর্মকাণ্ডের জন্য প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল সার্ভিস কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তাদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। এরই মাঝে উঠে এলো মুর্শিদাবাদের ফারাক্কা ব্লকের অর্জুনপুর হাই স্কুলের প্রসঙ্গ, যেখানে একইসঙ্গে ৩৬ জন শিক্ষক শিক্ষিকা চাকরি হারিয়েছেন। যার মধ্যে ২০ জনই ওই স্কুলে যোগদান করেছিলেন। বাকি ১৬ জন এসেছিলেন বিভিন্ন স্কুল থেকে বদলি নিয়ে। ওই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দশ হাজার।
গত সোমবারে কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে ঘিরে দুশ্চিন্তায় পড়ে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অভিভাবকরাও। গত সোমবার গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি এবং এসএসসি নবম দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০১৬ সালের গোটা প্যানেলটিকে বাতিল করে দেন কলকাতা হাইকোর্ট। মামলাটি চলছিল বিচারপতি মহম্মদ সাব্বির রশিদটি ও বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে।
শুধুমাত্র চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হননি কর্মহীনরা। সুদ সমেত বেতন ফিরিয়ে দিতে হবে এমন কথা শুনে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে, যার জন্য সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মাত্র চার সপ্তাহ কিভাবে সম্ভব তা ভেবেই পাচ্ছেন না তাঁরা। বলা চলে কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর রায় জানিয়ে এক উল্লেখযোগ্য নজির সৃষ্টি করেছেন কিন্তু প্রশ্ন উঠছে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এভাবে একই সাথে এত শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাকরি হারালে কিভাবে স্কুল চলবে এবং স্কুলের পঠন পাঠনইবা কিভাবে সম্ভব তা ভেবে পাচ্ছেন না কেউই।