Advertisement

SSC মামলায় মেয়ে-সহ নিখোঁজ পরেশ অধিকারী! মন্ত্রী উধাওয়ের এই ‘জাদু’র নেপথ্যে রয়েছেন এক ‘জাদুকরনি’

Advertisement

স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলায় সিবিআইয়ের তলব পেয়ে নেতা-মন্ত্রীরা ‘চিন্তায় অসুস্থ’ হয়ে হাসপাতালে ছোটেন। তবে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী অবশ্য তাঁর মেয়েকে নিয়ে ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গিয়েছিলেন।স্কুল সার্ভিস কমিশন মামলায় পরেশ অধিকারীকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশের পর মঙ্গলবার রাতে পদাতিক এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। কিন্তু বুধবার সকালে পদাতিক এক্সপ্রেস শিয়ালদহে পৌঁছলেও ট্রেন থেকে নামতে দেখা যায়নি তাঁকে।কোথায় গেলেন মেয়ে সহ পরেশ?

মন্ত্রী উধাওয়ের এই ‘জাদু’র নেপথ্যে এক ‘জাদুকরনি’ রয়েছেন।এই জাদুকরনির নাম ববিতা সরকার। বাড়ি শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ে।ববিতা ২০১৬ সালে স্কুলশিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসেন। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর মেধাতালিকা প্রকাশ হয়েছিল। সেই তালিকায় অবশ্য ববিতার নাম প্রথম ২০তেই ছিল। কিন্তু সেই তালিকা বাতিল করে দেয় এসএসসি।কিছু দিন পর প্রকাশিত হয় নতুন তালিকা। নতুন তালিকায় ববিতার নাম ছিল ওয়েটিং লিস্টে।

Advertisement

এসএসসি-র যে মেধা তালিকার শীর্ষে মন্ত্রীকন্যার নাম উঠেছিল, বেশি নম্বর পেয়েও সেই তালিকা থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন ববিতা।আর পুরনো তালিকায় কোথাও না থাকা অঙ্কিতার নাম নতুন সংযোজন।তালিকায় হঠাৎ এক ধাপ নীচে নামলেন কীভাবে, নতুন সংযোজন অঙ্কিতাই বা কে, তা তখনও জানতেন না ববিতা। তার পরই তা জানার জন্য তাঁর দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।এরপর র‍্যাঙ্কিংয়ের কার্ড নিয়ে ধর্নামঞ্চ থেকে শুরু করে এসএসসি কর্তৃপক্ষ— কোথাও যেতে বাকি রাখেননি ববিতা। এমনকি তথ্য জানার অধিকার আইনেও প্রশ্ন করেছেন। জানতে চেয়েছেন, তাঁর এবং অঙ্কিতার প্রাপ্ত নম্বর কত?

ববিতা মন্ত্রীকন্যার চেয়ে ১৬ নম্বর বেশি পেয়েছিলেন। তবুও ববিতার নাম তালিকার ২১ নম্বরে ছিল। আর পরেশের মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম ছিল মেধা তালিকার শীর্ষে।ববিতা বিবাহিতা তাঁর দুই সন্তানও আছে। গত পাঁচ বছর ধরে তাদের সামলে নিজের লড়াই চালিয়েছেন। বিপক্ষে যখন ‘প্রভাবশালী’ মন্ত্রী, তখন লড়াই যে কঠিন হবে, তা বুঝেছিলেন ববিতাও৷ কিন্তু হাল ছাড়েননি ববিতা। শেষ পর্যন্ত পাঁচ বছর পর পরেশকে যে সিবিআইয়ের ভয়ে পালিয়ে বেড়াতে হল, তার কারণ এই ববিতাই।

এককালে ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন পরেশ। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। দল বদলে যখন ২০১৯ সালে তৃণমূলে এলেন তখনও তাঁর ‘প্রভাব কমেনি।রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন মেয়ের চাকরি-সহ তিনটি শর্তেই তৃণমূলে এসেছিলেন পরেশ। পরে লোকসভা ভোটে হারলেও যখন বিধানসভায় জিতলেন, তখন তাঁকে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পরেশ অধিকারীর কন্যা-দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনার কৃতিত্ব সিদ্ধার্থ মজুমদারকে দিচ্ছেন অনেকে। কারণ হাই কোর্টে তিনিই জানিয়েছিলেন, পরেশের কন্যাকে অবৈধ ভাবে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়ার কথা।সিদ্ধার্থ মজুমদার এসএসসির চেয়ারম্যান পদ থেকে বুধবার ইস্তফা দিয়েছেন।কিন্তু শিলিগুড়ির কোর্ট মোড়ের ববিতা যদি তাঁর অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াই চালিয়ে না যেতেন, তবে সিদ্ধার্থের একার পক্ষে মন্ত্রীর গোপন বন্দোবস্ত ফাঁস করা সম্ভব হত না।

Join Join