প্রাইমারি টেট (TET) পরীক্ষা পশ্চিমবঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত। প্রতি বছর এই টেট (TET) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের হাজার হাজার পরীক্ষার্থী। অনেক জটিলতা কাটিয়ে ২০২২ সালে আবার প্রাইমারি টেট (TET) পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হয়। প্রায় দেড় লক্ষ পরীক্ষার্থী প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন। তবে এবার ২০২২ সালের টেট নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানাল হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন সকলেই। আবার অনেকেই বলছেন ২০১৭ সালের পুনরাবৃত্তি। এবার দেখা যাক, টেট পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন কোন আপডেট রয়েছে।
প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় গুরুতর অভিযোগ
২০১৭ সালের টেট পরীক্ষা নিয়ে প্রথম থেকেই রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। বিশেষ করে ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছিল। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির কান্ড আলাদা করে উল্লেখ করার নয়। নিয়োগ দুর্নীতি কান্ড নিয়ে বর্তমানে গোটা রাজ্য তোলপাড়। ২০১৭ সালের টেট পরীক্ষার পর ২০২২ সালের টেট পরীক্ষাতেও ওঠে প্রশ্নপত্র সংক্রান্ত অভিযোগ। টেট পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বহু পরীক্ষার্থী। গুরুতর অভিযোগ ওঠে যে, ২০১৭ এবং ২০২২ সালের পরীক্ষায় প্রায় ২০ টিরও বেশি ভুল প্রশ্ন এসেছিল। ঠিক এমনই দাবি তুলে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল উচ্চ আদালতে।
টেটের ভুল প্রশ্ন মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশ
প্রথমে টেট পরীক্ষা নিয়ে অভিযোগ ওঠে যে টেট পরীক্ষায়, মোট ১৩ টি প্রশ্ন ভুল পাওয়া গিয়েছিল। যদিও পরে এই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ টিতে। এই গুরুতর অভিযোগ নিয়েই টেট সংক্রান্ত মামলা জোরদার হয়ে দাঁড়ায় কলকাতা হাইকোর্টের বেঞ্চে।প্রাইমারি টেট পরীক্ষার মামলার শুনানিতে এর আগে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন যাদবপুর ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ২০১৭ সালের ঘটনার জন্য বিশ্বভারতী ও ২০২২-সালের জন্য অভিযোগ বিবেচনার জন্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ফের কলকাতা হাইকোর্টের তরফে টেটের ভুল প্রশ্ন মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য প্রকাশ্যে এলো।
এর মধ্যে সম্প্রতি, মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের দুই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানান, প্রতিটি বিষয়ের জন্য গঠন করতে হবে আলাদা আলাদা কমিটি। হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত মতো টেটের ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত পাঁচটি মামলার জন্য মোট পাঁচজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগের ইঙ্গিত দিয়েছে উচ্চ আদালত। তবে ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনোও চূড়ান্ত রায় জারি করেনি। সূত্রের খবর, প্রাইমারি টেটের ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত মামলা গত শুক্রবার শেষ হয়েছে। আর খুব সম্ভবত বুধবার মামলার রায়দান হতে পারে।