বাংলার বাড়ি (Banglar Bari Scheme) নিয়ে সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। খুব শীঘ্রই ছাড়া হবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। মোট ১৬ লাখ পরিবারকে দেওয়া হবে। সকলে পাবেন ১.২ লক্ষ টাকা করে সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কারা কারা আছেন তালিকায়? কত তারিখের মধ্যে পাবেন? জেনে নিন আজকের প্রতিবেদন থেকে।
মঙ্গলবার বিকেলে এক প্রধান ঘোষণা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাজ্যের প্রধান আবাসন প্রকল্প ‘বাংলার বাড়ি (গ্রামীণ)’ এর আওতায় দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে মোট ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা সরাসরি ১৬ লাখ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করা হবে। এর ফলে পরের ধাপে এই প্রকল্পের মোট সুবিধাভোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে ২৮ লাখ পরিবারে। প্রথম পর্যায়ে ১২ লাখ পরিবার পেয়েছিল ডিসেম্বরে প্রথম কিস্তি, এবার আরও ১৬ লাখ যোগ্য পরিবার মিলবে একই সুবিধা।
‘বাংলার বাড়ি (গ্রামীণ)’ প্রকল্পের (Banglar Bari Scheme) মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ বাংলার দরিদ্র ও যোগ্য পরিবারকে নিরাপদ ও টেকসই আবাসন নিশ্চিত করা। জমি থাকা সত্ত্বেও পাকা ঘর নির্মাণে তারা প্রায়ই পিছিয়ে পড়ে; এ সমস্যা দূর করতে রাজ্য সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করছে বিপুল অর্থ। কেন্দ্রীয় কোনও অনুদান ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই ১৪,৪০০ কোটি টাকা খরচ করেছে ১২ লাখ পরিবারের জন্য, এবং নতুন পর্যায়ে ১৬ লাখ পরিবারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে অতিরিক্ত ৭,২০০ কোটি টাকা।
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে (Banglar Bari Scheme) টাকার পরিমাণ
বাংলার বাড়ি প্রকল্পের অধীনে প্রত্যেক পরিবারের জন্য মোট ১.২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়, যা দুই কিস্তিতে সমানভাবে বণ্টিত: প্রথম কিস্তি ৬০ হাজার টাকা নির্মাণের শুরুতেই এবং দ্বিতীয় কিস্তি ৬০ হাজার টাকা কাজ সম্পন্ন করার সময়। আগেরবার ১২ লাখ পরিবার স্বীকৃত হয়েছে, তাদের প্রথম কিস্তি জারি হয়েছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। এবার ঘোষণা অনুযায়ী, নতুন ১৬ লাখ পরিবার প্রথম কিস্তি পাবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় কিস্তি মিলবে ২০২৬ সালের মে মাসে।
Banglar Bari Scheme কারা কারা পাবেন?
তালিকাভুক্ত হতে যারা নির্ণীত হয়েছে, তারা সবই প্রত্যন্ত গ্রামের প্রান্তিক রাজ্যবাসী, যারা আর্থিক সক্ষমতার অভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত বাড়ি নির্মাণে পিছিয়ে পড়েছিলেন। এই পর্যায়ের জন্য পঞ্চায়েত ও ব্লক পর্যায়ের প্রাথমিক যাচাই সম্পন্ন হয়েছে, এবং রাজ্য সরকারের ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রতিটি তথ্য বাইসাইকেল-বিভাগ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। উপভোক্তারা স্বচ্ছতার স্বার্থে মোবাইল নম্বর এবং আধার নম্বরের মাধ্যমে বার্ষিক যাচাইয়ে উত্তীর্ণ হচ্ছেন।
কোথায় আবেদন করবেন?
যেসব গ্রামীণ পরিবার ইতিমধ্যে তালিত, তাদের আলাদা আবেদন করতে হবে না। আগেরবারের মতো যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা। তবে নতুন পর্যায়ে যদি কারো তথ্য পরিবর্তন বা আপডেট করতে হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত অথবা ব্লক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে ৩০ জুলাই ২০২৫-এর মধ্যেই।
দ্বিতীয় কিস্তি প্রাত্যক্ষিক হস্তান্তর: মে ২৩, ২০২৫ (আজই)
নতুন ১৬ লাখ পরিবারের প্রথম কিস্তি: ডিসেম্বরে ২০২৫ (তৃতীয় সপ্তাহ)
নতুন ১৬ লাখ পরিবারের দ্বিতীয় কিস্তি: মে ২০২৬ (প্রথম সপ্তাহ)
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গ্রামীণ বাংলার প্রতিটি পরিবার যেন উন্নত জীবনযাত্রার অধিকারী হয়, এটাই আমাদের স্পষ্ট লক্ষ্য। ১৬ লাখ নতুন পরিবারকে এই উদ্যোগের আওতায় আনতে পারায় আমি আনন্দিত। আমরা মানুষের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” শনিবার গেরুয়া পতাকা দেখা দেবার আগে তাঁর এই ঘোষণা রাজ্যের প্রত্যন্ত কোণ পর্যন্ত চমক ছড়িয়ে দিয়েছে।