Indian railways longest train: ভারতীয় রেল ভারতে যাতায়াত ব্যবস্থার অন্যতম সেরা ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ।দেশের লাইফলাইন ভারতীয় রেল সারা বিশ্বের সামনে ভারতের মান বাড়িয়েছে। দেশের গর্বের এই প্রতিষ্ঠান,অত্যাধুনিক ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফসল।এই প্রতিষ্ঠানকে ব্রিটিশরা শুরু করলেও ভারতীয়রা এগিয়ে নিয়ে যায়। এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়ার জন্য দেশের মানুষের কাছে সর্বাগ্রে থাকে ভারতীয় রেল।
ভারতের রেল নেটওয়ার্ক বিশ্বের মধ্যে অন্যতম দীর্ঘতম (Indian railways longest train)। বিরাট সীমানার দেশ ভারতে একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিশাল দূরত্বে রেল চলাচল করে।কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত বিস্তৃত রেল যোগাযোগ ভারতকে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছে।সারা দেশের নানা প্রান্তে জালের মতো এই ট্রেন লাইন ছড়িয়ে রয়েছে।
দেশের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অনেক জনহিতকর কাজ করে রেল। সেই কারনে মাঝে মধ্যে নানা নিয়মও পরিবর্তন করে ভারতীয় রেল। তবে ভারতীয় রেলের উদার মানসিকতার পরিচয় তখন পাওয়া যায়, যখন করোনা পরিস্থিতিতে দেশের শ্রমিকদের নিজের বাড়ি পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিশেষ ট্রেন চালানো হয়।করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নজিরবিহীন কাজ করেছে ভারতীয় রেল।
দেশে বিশেষ কিছু ট্রেন চালানো হয় যা সমন্ধে অনেকেই হয়তো কিছুই জানেন না।লকডাউনে বিশাল আকৃতির ট্রেন চালিয়ে নজির গড়েছে ভারতীয় রেল।দেশজুড়ে লকডাউন চলাকালীন করোনা যোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ এবং বিভিন্ন জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের কথা ভেবে দেশের বিভিন্ন অংশে স্পেশাল কিছু ট্রেন চালিয়েছে ভারতীয় রেল (Indian railways longest train)।রেলমন্ত্রক সুপার ‘অ্যানাকোন্ডা’ নামক একটি ১৭৭ কোচ বিশিষ্ট মালবাহী ট্রেনও চালিয়েছিল।
দক্ষিণ পূর্ব মধ্য রেল তিনটি মালগাড়ি জুড়ে দেশে প্রথমবার ২.৭৭৩ মিটার দীর্ঘ (প্রায় পৌনে তিন কিমি)দীর্ঘ মালগাড়ি চালানোর রেকর্ড করেছে।’সুপার অ্যানাকোন্ডা’ নামের এই ট্রেন উড়িষ্যার লাজকুর থেকে রাউরকেল্লার মধ্যে চালানো হয়েছিল। সুপার অ্যানাকোন্ডায় তিনটি মালগাড়িকে একসাথে যুক্ত করা হয়েছিল। এই ট্রেন রেকর্ড গতিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছা যায় (Indian railways longest train) ।
বিশাল ‘অ্যানাকোন্ডা’ সাপের পর প্রায় ২.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ট্রেন ‘শেষনাগ’ চালিয়ে রেকর্ড তৈরি করেছে ভারতীয় রেল।দেশের চারটি ট্রেনকে একসাথে করে শেষনাগ নামে দীর্ঘতম মালগাড়ি চালানো হয়।এই বিশেষ ট্রেনটির (Indian railways longest train) নামকরণ করা হয় পুরাণের সেই সাত মাথা সাপ, শেষ নাগে’র নামে যার উপরে বিশ্রাম নিয়েছিলেন স্বয়ং ভগবান শ্রী বিষ্ণু।
ভারতীয় রেলের এই কৃতিত্বের ফলে আরও দ্রুত ও সহজভাবে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় মাল স্থানান্তর করা সম্ভব হয়েছিল।সুদীর্ঘ এই শেষনাগ ট্রেনটি চারটি খালি বক্সেন রেক এবং চারটি বৈদ্যুতিন লোকোমোটিভ দ্বারা চালিত। এটিতে নয়টি ইঞ্জিন এবং চারটি গার্ড ভ্যানও রয়েছে। ২৫১ টি ওয়াগন দিয়ে তৈরি দীর্ঘাকার এই মালট্রেনটি দক্ষিণ পূর্ব রেলের নাগপুর স্টেশন থেকে চালানো হয় (Indian railways longest train)।
কিন্তু এই দুটি মালগাড়িকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে আরেকটি মালগাড়ি, যার নাম “বাসুকি”। এটিই আপাতত ভারতের দীর্ঘতম মালগাড়ি হওয়ার রেকর্ড গড়েছে।২৯৫ টি কোচ সহ পণ্যবাহী ট্রেন এই বাসুকি । দৈর্ঘ্যে প্রায় ৩.৫ কিমি লম্বা। বৃহৎ এই মালগাড়িকে চালানোর জন্য রয়েছে ৫টি লোকোমোটিভ। মালগাড়িটি রায়পুর রেলওয়ে বিভাগের ভিলাই থেকে বিলাসপুর রেলওয়ে বিভাগের কোরবা পর্যন্ত চলে।
তবে শুধু ভারতেরই নয়, বাসুকিকে বিশ্বের দীর্ঘতম মালগাড়ি বলে মনে করা হয়।এই পণ্যবাহী ট্রেনটিকে চালানোর জন্য পৃথক ট্রেন রুট তৈরি করেছে রেল। আসলে ক্ষমতায় এসেই নরেন্দ্র মোদী বুঝতে পারেন যে, দেশে পণ্য পরিবহনকে আরো উন্নত করতে হলে তার জন্য আলাদা করে একটি ট্রেন রুট তৈরি করতে হবে। এইজন্য তিনি মালবাহী করিডোরের উদ্বোধন করেন। আর ওই রুটেই এই বিশেষ ট্রেনটি চলে(Indian railways longest train)।