নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Scam) হাইকোর্টের ঐতিহাসিক রায়। একসঙ্গে ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের পর বেসামাল দশা রাজ্য সরকারের। একই সঙ্গে চিন্তায় চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। শুধুমাত্র চাকরি বাতিল নয়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সুদ-সহ ফেরত দিতে হবে বেতন। উচ্চ আদালতের রায় কার্যত টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে বাংলায়।
এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঞ্চ থেকে হুঁশিয়ারি দেন, চাকরি বাতিল হওয়ার প্রার্থীদের জন্য লড়াই করবে রাজ্য। কেউ পাশে না থাকলেও সরকার রয়েছে চাকরিহারাদের পাশে। উচ্চ আদালতের রায়কে রাতারাতি চ্যালেঞ্জ জানালো এসএসসি, রাজ্য সরকার ও পর্ষদ। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দায়ের হল মামলা।
স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর অধীনস্থ ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। নির্দেশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে গেছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং শিক্ষা দপ্তর। অন্য দিকে, সোমবার উচ্চ আদালত রায়ের পরে স্পষ্ট জানায় এসএসসির দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) সংক্রান্ত অভিযোগগুলির তদন্ত চালিয়ে যাবে সিবিআই।
তদন্তের প্রয়োজনে সিবিআই সন্দেহভাজনদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারবে। এমনকি সন্দেহভাজন যদি মন্ত্রিসভার সদস্য হন, তবুও সিবিআই এর জেরা থেকে ছাড় পাবেন না। একদিকে হাইকোর্টের নির্দেশ, অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের মামলা দুয়ের মাঝে দোটানায় ভুগছেন চাকরিহারা ও অপেক্ষারত চাকরিপ্রার্থীরা।
সোমবার হাইকোর্টের নির্দেশের পর অপেক্ষারত প্রার্থীরা বলেন, চাকরি বাতিল হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু শূন্যপদ পুরণ হচ্ছে কি? দিনের পর দিন ধরে তারা পথে আন্দোলন করছেন। কবে বিচার পাবেন সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখা প্রার্থীরা? একই সাথে চাকরি বাতিল হওয়া প্রার্থীরাও পথে নেমেছেন আন্দোলনে। অনেকেই বলছেন, সবাই অযোগ্য নন।
যোগ্যদের চাকরি কেন বাতিল হবে! যদিও দুই পক্ষের কেউই জানেন না আগামী দিনে এই রায়ের ভবিষ্যৎ কি হতে চলেছে। মামলার জটিলতা কেটে নতুন দিগন্ত কবে আসবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অপেক্ষায় সবাই। নির্বাচন ভোটপর্বে চিন্তার মেঘ কি কাটবে রাজ্য সরকারের? প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি কান্ডে রাজ্যে (WB SSC Scam) চাকরির বাতিলের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও বহু অযোগ্য প্রার্থীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) নির্দেশে হাজার হাজার প্রার্থীর চাকরি বাতিল হয়েছে অতীতে। যদিও শূন্য পদে চাকরি পাওয়ার সংখ্যা লক্ষ্যণীয়ভাবে কম। চাকরি বাতিলের ফলে বর্তমানে রাজ্যের স্কুলের শিক্ষক-শূন্যতা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্যার প্রতিকার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া। তবে আদালতের জটিলতা না কাটলে সেই পথও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ। চাকরি-প্রার্থীদের প্রার্থনা, নিয়োগে গতি আসুক। জটিলতা কাটিয়ে নতুন করে নিয়োগ হোক পশ্চিমবঙ্গে।