Cancelled OBC Certificate – কলকাতা হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়। বাতিল হল ২০১০ সালের পরবর্তী সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Certificate)। দিন কয়েক আগেই বড়সড় সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায় চিন্তায় ফেলেছে রাজ্যবাসীকে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের তরফে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, ২০১০ সালের পর থেকে ইস্যু হওয়া সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Certificate) নির্দিষ্ট আইন মেনে হয়নি। ফলস্বরূপ প্রায় পাঁচ লক্ষ সার্টিফিকেট বাতিল করেছে আদালত। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই রায়ের ফলে সমাজে কোন প্রভাব পড়বে কিনা। পাশাপাশি, ওবিসি প্রার্থীরা চাকরিক্ষেত্রে সংরক্ষণ পাবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় দেখা দিচ্ছে। এখন, কি জানাচ্ছে আদালত? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
বিপুল সংখ্যক ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল (Cancelled OBC Certificate) করল কলকাতা হাইকোর্ট!
সারা দেশ জুড়ে চলছিল লোকসভা নির্বাচন। আর ভোটের মাঝেই বড়সড় সিদ্ধান্ত জানালো কলকাতা হাইকোর্ট। তৃণমূল জমানায় জারি হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি সরাসরি বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানিয়েছে ২০১০ সালের পর যারা ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছেন, তাদের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল হবে। ২০১১ সাল থেকে বাংলার মসনদে বসে তৃণমূল সরকার। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত জারি হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করা হয়েছে। হিসেব বলছে বাতিল হয়েছে প্রায় পাঁচ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট। বাতিল হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি চাকরিক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না।
কেন বাতিল করা হলো ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি?
২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় তৃণমূল সরকার আসার পর থেকে ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১২ সালে এই প্রসঙ্গে একটি মামলা উঠে আদালতে। ১২ বছর পর ২০২৪ সালে সেই মামলার রায় দিল আদালত।সমাজের অনগ্রসর শ্রেণী ওবিসি সার্টিফিকেট দ্বারা সংরক্ষণ পান, সুযোগ সুবিধা পান। অভিযোগ ওঠে সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ওবিসি তথা অনগ্রসর শ্রেণী নন, তা সত্ত্বেও তাঁদের ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। ঘরতর বেআইনি ভাবে প্রক্রিয়াটি পরিচালনা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তাই ২০১০ সালের পর থেকে ওবিসি প্রার্থীর তালিকায় নাম ওঠা ক্যান্ডিডেটদের বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
চাকরিক্ষেত্রে ওবিসি সার্টিফিকেট ব্যবহার করা যাবে?
আদালতের সিদ্ধান্ত মত, ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি হওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটগুলি চাকরিক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। তবে যারা ইতোমধ্যে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন, অথবা প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আদালতের সিদ্ধান্ত বাধা হিসেবে দাঁড়াবে না। অর্থাৎ তাদের ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হবে না। অন্যরা জাতিগত শংসাপত্র চাকরি ক্ষেত্রে অথবা অন্য ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারবেন না। আদালতের এই রায় প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে চলছে। হাইকোর্টের সার্টিফিকেট সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে মানেন না বলে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, শংসাপত্রগুলি নির্দিষ্ট আইন মেনে হয়েছে। তাই এগুলি অবৈধ নয়। তবে হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায় বদল হচ্ছে না। এবার থেকে উপযুক্ত আইন ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে শংসাপত্র তৈরি হবে বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।