এখনও কি আপনার ডিজিটাল রেশন কার্ড হয়নি? তাহলে এবার কিন্তু বড় সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ খাদ্য দফতরের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিজিটাল রেশন কার্ড ছাড়া আর পাওয়া যাবে না কেরোসিন তেল। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে খাদ্য দফতর।পুরোপুরি বন্ধ হতে চলেছে পুরনো নন-ডিজিটাল কিংবা পেপার রেশন কার্ড। বর্তমানে এমন কার্ডধারী গ্রাহকরা শুধু কেরোসিন তেল পান।কার্ড পিছু বরাদ্দ মাসে দেড়শো মিলিলিটার।আগামী জুন মাস থেকে সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে।ব্যতিক্রম শুধু দার্জিলিং।
আপাতত আরও কিছুদিন সেখানে পেপার রেশন কার্ডের গ্রাহকদের কেরোসিন দেওয়া হবে।বাকি সর্বত্র ১ জুন থেকে নন-ডিজিটাল কার্ডে মিলবে না আর কোনও কিছু।সম্প্রতি খাদ্যদপ্তর এব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।কাগজের রেশন কার্ডে খাদ্যশস্য বরাদ্দ অনেক আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।যদিও খাদ্যদপ্তর সূত্রে খবর এই মুহূর্তে রাজ্যে এমন গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৭ লক্ষ। তাঁরা মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা সল্টলেক এবং দার্জিলিংয়ে ছড়িয়ে রয়েছেন।
কলকাতা ও সল্টলেক মিলিয়ে পেপার রেশন কার্ডের সংখ্যা ১৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ৭৭০। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৭২৭টি এবং দার্জিলিংয়ে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ২০০টি।খাদ্যদপ্তর জানিয়েছে দার্জিলিং জেলার চা বাগানগুলিতে এখন ডিজিটাল রেশন কার্ড দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী আধিকারিকরা। তাই আপাতত দার্জিলিংয়ে পেপার রেশন কার্ডে কেরোসিন দেওয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রেও বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে কোন কোন এলাকায় এই সুবিধা বজায় থাকবে, তা জানিয়ে দেবে খাদ্যদপ্তর।
অর্থাৎ দার্জিলিং ছাড়া প্রায় ১৬ লক্ষ গ্রাহকের উপর জুন মাসে কোপ পড়তে চলেছে।এই বিষয়ে এক আধিকারিক জানিয়েছেন পেপার রেশন কার্ড বদলানোর জন্য গ্রাহকদের মধ্যে চালানো হবে প্রচার অভিযান।ডিজিটাল রেশন কার্ড করে নিলে তাঁদেরই বেশি সুবিধা।কারণ তখন মাসে মাথাপিছু ১৫০ মিমির বদলে ৫০০ মিমি বা তার বেশি পরিমাণে কেরোসিন মিলবে।পাশাপাশি পাওয়া যাবে অন্য খাদ্যশস্যও। যদিও বরাদ্দ বন্ধের বিষয়টি সমর্থন করছেন না কেরোসিন ডিলারদের রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত।
তাঁর মতে অনেক গ্রাহক রেশনে শুধু কেরোসিন নিতেই আগ্রহী।তাই তাঁরা পেপার কার্ড রেখে দিয়েছিলেন। খাদ্যদপ্তরের সিদ্ধান্তের সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা।খাদ্যদপ্তরের বক্তব্য এতে রাজ্যের জন্য বরাদ্দ কেরোসিনের যথাযথ ব্যবহারে সুবিধা হবে।এখন পুরো কোটা তুলতে সমস্যা হচ্ছে। প্রায় প্রতি মাসে বরাদ্দ কেরোসিন পুরোপুরি তোলা যাচ্ছে না।
ডিজিটাল রেশন কার্ড স্থায়ীভাবে চালু হলে সেই কোটার পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার করা যাবে।আবার রেশনে চাল-গম দেওয়ার সময়ে ই-পস যন্ত্রের মাধ্যমে আধার নম্বর যাচাই করা হচ্ছে।কেরোসিনে এই ব্যবস্থা চালু হয়নি।সব কার্ড ডিজিটাল হয়ে গেলে এখানেও ই-পস যন্ত্র ব্যবহার চালু হলে স্বচ্ছতা আসবে বণ্টন প্রক্রিয়ায়।