পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুখেনের সংসার চালাতে টোটোই ভরসা

Advertisement

panchayet deputy of raiganj ply toto to earn money

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

নিউজ ডেস্কঃ অধিকাংশ নেতা ক্ষমতায় আসার পর কয়েক বছরের মধ্যেই বাড়ি,গাড়ি করে নিজের আদব কায়দা পালটে ফেলে। আমাদের রাজ্যে এইরকম নজির অনেক দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমও চোখে পড়ে।তিনি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, কিন্তু এলাকাবাসীরা টোটোচালক সুখেনদা নামেই তাঁকে চেনেন। আসলে পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হলেও ৪৪ বছর বয়সি সুখেন দেবশর্মা পেশায় টোটোচালক। ২০১৮ সালে সুরুন-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি।তবে উপপ্রধান হলেও জীবনযাত্রা পালটাননি সুখেন। দুই সন্তান, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। সংসার চালাতে এখনও তিনি সকাল ও বিকেলে নিয়মিত টোটো চালান।

Advertisement

সুখেনবাবুর কথায় উপপ্রধান হিসেবে যা ভাতা পাই, তাতেই খুশি। মাঝেমধ্যে গ্রামের মানুষকে নিয়ে সভা করি এবং তাঁদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে ভাতায় সংসার চলে না, তাই টোটোই ভরসা। কোনও দিন ৪০০, আবার কোনও দিন ৩০০ টাকা রোজগার হয়। তাতেই সংসার চলে।সুখেনবাবু প্রতিদিন সকালে নিজের গ্রাম থেকে মাছ ও সবজি নিয়ে রায়গঞ্জের দেবীনগর বাজারে যান। তারপর টোটোয় যাত্রী নিয়ে চলে যান রুপাহার বাজারে। সেখানে চা-বিস্কুট খেয়ে আবার টোটো নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। গ্রামের মানুষ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজের টোটোতে করেই হাসপাতালে পৌঁছে দেন। গ্রামের কারও পঞ্চায়েতে কাজ থাকলে তাঁকে পৌঁছে দিয়ে নিজের কাজও সেরে আসেন।

Advertisement

বাড়ি থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে টোটো চালিয়ে পৌঁছন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। তবে সপ্তাহের সবদিন যেতে না পারলেও সপ্তাহে ৩ দিন পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে উপপ্রধানের সব কর্তব্য সারেন সুখেনবাবু। বাড়ি ফিরে স্নান খাওয়া সেরে খানিক বিশ্রাম নিয়েই বেরিয়ে পড়েন আবার টোটো নিয়ে। দিন-রাত মিলিয়ে ৮ ঘণ্টা টোটো চালান। উপপ্রধান একদিকে যেমন মানুষকে পরিষেবা দেন, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে নিয়মিত টোটো চালান।

২০১৮ সালে সুরুন পঞ্চায়েতের বেলুল সংসদ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে জয়ী হয়েছিলেন সুখেনবাবু।সুখেনবাবু বলেন, কষ্ট করে বড় হয়েছি। অভাবের সংসারে পড়া শেষ করতে পারিনি তাই আলমারির কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতে শুরু করি। রাজনীতিতে ঝোঁক ছিল,প্রথম থেকেই তৃণমূল করি। ২০১৮ সালে প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়ে জয়ী হই। এভাবেই মানুষের পাশে থাকতে চাই,সবাই ভালো থাকুক এটাই চাই।আমি অসত পথে রোজগার করতে পারব না।সংসার তো চালাতে হবে।পঞ্চায়েত থেকে যা ভাতা পাই তা দিয়ে সংসার ও ছেলেদের পড়াশোনার খরচ ওঠে না। তাই টোটো চালাতে হয়।

Advertisement