Post Office Scheme 2022: প্রত্যেকেই নিজের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চান। বিশেষ করে অবসরের পর ভালো ভাবে বেঁচে থাকতে টাকা জমানোটা প্রয়োজন। একটা বিশাল সংখ্যায় মানুষ পেনশনের আওতার বাইরে। ফলে ৬০ বছর অর্থাৎ অবসরের পর কীভাবে চলবেন সেই আশঙ্কাতেই বিভিন্ন স্কিমে টাকা রাখেন মানুষজন। যেখানে বেশি সুদ পাওয়া যায় কিংবা বেশি সুবিধা পাওয়া যায় সেখানে সারা জীবনের সঞ্চিত টাকা রাখেন মানুষজন।
বর্তমান মূল্য বৃদ্ধির বাজারে কোথা থেকে দুটো পয়সা বেশি উপার্জন করা যেতে পারে, সেই দিকে সকলের নজর।আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শুধু উপার্জন করলেই তো হবে না, সেই টাকা সঠিক জায়গায় বিনিয়োগ করে কিভাবে ভবিষ্যতের জন্য উচ্চ হারে লাভ তোলা যেতে পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন।প্রত্যেকেই ব্যাংক বা পোস্ট অফিস সহ বিভিন্ন জায়গায় টাকা সঞ্চয় করেন(Post Office Scheme 2022)।
সম্প্রতি অনেকেই মিউচুয়াল ফান্ড (Mutual Fund) শেয়ার বাজারেও ( Share Market) টাকা বিনিয়োগ করেন উচ্চ লাভের আশায়। কিন্তু এই ধরনের প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কম বেশি একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। সাধারণ মানুষ চান এমন একটি জায়গায় টাকা বিনিয়োগ করা হোক, যেখান থেকে একদিকে যেমন উচ্চ হারে রিটার্ন পাওয়া যাবে, ঠিক তেমনি সেই প্রকল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সেই অর্থে কোনো ঝুঁকি থাকবে না (Post Office Scheme 2022)।
বর্তমানে বেশি রিটার্নের আশায় অনেকেই নানা ধরনের জালিয়াতির পাল্লায় পড়ে তাদের সমস্ত সেভিংস হারিয়েছে। তাই সুরক্ষিত ভাবে নিজেদের টাকা জমিয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়ার জন্য সবথেকে ভালো অপশন হল পোস্ট অফিস।দেশের সমস্ত জায়গায় এখনও ব্যাঙ্ক পৌঁছায়নি। সেই তুলনায় পোস্ট অফিসের ব্যাপ্তি অনেকটা বেশি। পোস্ট অফিসের বিভিন্ন স্কিম আছে, যেগুলো গ্রাহকদের অতিরিক্ত হারে সুদ প্রদান করে থাকে (Post Office Scheme 2022)।
তার মধ্যে একাধিক স্কিমের সুদ আবার ব্যাঙ্কের তুলনায় বেশ বেশি। বেশ কিছু স্কিম আবার অতি কম সময়ে দ্বিগুণ টাকা রিটার্ন দিতে পারে।এরকমই একটি দুর্দান্ত পোস্ট অফিসের একটি স্কিম হল কিষাণ বিকাশ পত্র (Kishan Vikash Patra )। পোস্ট অফিসে একাধিক সঞ্চয় প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময়ের জন্য বিনিয়োগ করার কথা যদি কেউ ভাবেন, তাহলে কিষান বিকাশ পত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
এই সরকারি প্রকল্পে বিনিয়োগ (Investment) করলে কোনো ঝুঁকি থাকে না। পাশাপাশি সঞ্চয় করা টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার পরে দ্বিগুণ হয়ে যায়। কিষাণ বিকাশ পত্র (Kine Diba Ratia) প্রকল্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এর ওপর চক্রবৃদ্ধি সুদ পাওয়া যায়। এই স্কিমটি শুধুমাত্র রিটার্নের সম্পূর্ণ গ্যারান্টি দেয় না পাশাপাশি অন্যান্য বিকল্পগুলির তুলনায় আরও সুবিধা দেয়। এই স্কিমে বিনিয়োগ করা টাকা ১২৪ মাসে দ্বিগুণ হয়ে যায় (Post Office Scheme 2022)।
কিষাণ বিকাশ পত্র কী?
কিষাণ বিকাশ পত্র বা KVP হল ভারত সরকার কর্তৃক প্রচারিত ক্ষুদ্র সঞ্চয়পত্রগুলির মধ্যে একটি। যদিও এই স্কিমটি ১৯৮৮ সালে চালু করা হয়েছিল।এটি ২০১১ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তীকালে সরকারের নির্দেশেই ফের ২০১৪ সালে Kisan Vikas Patra শুরু হয়। সেই থেকে এই যোজনায় টাকা রাখতে কিছু নতুন নিয়ম মানতে হয়।সরকারের আর্থিক যোজনা অনুযায়ী, জমা অর্থ দ্বিগুণ হতে সময় লাগে ১২৪ মাস (১০ বছর ৪মাস)। এই নির্দিষ্ট সময়ই হল কিষাণ বিকাশ পত্রের টাকা জমা রাখার মেয়াদকাল।
এই স্কিমের উদ্দেশ্য হল দীর্ঘমেয়াদী মেয়াদের জন্য ছোট আকারের সঞ্চয়কে উন্নীত করা। কিষাণ বিকাশ পত্রের উদ্দেশ্য হল বিনিয়োগের মেয়াদে বিনিয়োগ দ্বিগুণ করা।এই স্কিমে ৫০,০০০ টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে গেলেই দেখাতে হবে প্যান কার্ড। এমনকী ১০,০০,০০০ টাকার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আয়ের প্রমাণ দেখাতে হবে আমানতকারীকে। তবে সরকার পাশে দাঁড়ানোর পর থেকেই বর্তমানে ঝুঁকিহীন বিনিয়োগ তকমা পেয়েছে কিষাণ বিকাশ পত্ৰ৷
কিষাণ বিকাশ পত্রে সুদের হার?
বর্তমানে এই স্কিমে 6.9 শতাংশ (Post Office Scheme 2022 ) হারে সুদ দেওয়া হয়।এটি এককালীন বিনিয়োগ প্রকল্প। অর্থাৎ আপনাকে প্রতি মাসে বা প্রতি বছর এটিতে অর্থ রাখার দরকার নেই। আপনি এতে কমপক্ষে ১০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। এতে বিনিয়োগের সর্বোচ্চ কোনও সীমা নেই। এর অর্থ হল আপনি একবারে কিষাণ বিকাশ পত্রে যে কোনও পরিমাণ বিনিয়োগ করতে পারেন।
কারা এই স্কিম করতে পারেন ?
এই স্কিমে টাকা রাখতে হলে আমানতকারীকে অবশ্যই একজন ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। ব্যক্তিগত (Personal) বা যৌথভাবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন আমানতকারীরা।১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীরা KVP Scheme-এ বিনিয়োগ করতে পারেন। তিনজনে যৌথভাবে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। নাবালকের ক্ষেত্রে তার প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবক এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। KVP Scheme-এ বিনিয়োগের ১ বছর সময়ের মধ্যে টাকা তুলতে গেলে কোনো সুদ দেওয়া হয় না।
কিষান বিকাশ পত্র স্কিমটি (Post Office Scheme 2022) আয়কর আইনের 80C-র অধীনে আসে না। তাই এতে প্রাপ্ত টাকার ওপরে আয়কর দিতে হবে। তবে এই প্রকল্পের টিডিএস (TDS) কাটা হয় না। দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চাইলে কিষাণ বিকাশ পত্রে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।